~ঢালের বিস্তারিত~
আমি আমার গত পোস্টে ঢাল নিয়ে বিস্তারিত লিখতে চেয়েছিলাম, তো ডিফারেন্সিয়াল ক্যালকুলাসের প্রাথমিক আলোচনা করতেই পোস্টটি বড় হয়ে যাচ্ছিল জন্য ওই পোস্টে আর ঢালের বিস্তারিত সংযোজন করি নি। আজকের পোস্টে ঢাল নিয়ে বিস্তারিত লিখতে যাচ্ছি। ডিফারেন্সিয়াল ক্যালকুলাস বোঝার জন্য ঢাল খুবই জরুরি একটা ধারণা।
-
ঢালের সংজ্ঞা
-
ঢালের সাথে সরলরেখার সম্পর্ক
-
ঢালের বাস্তব উদাহরণ
-
ঢালের মান বের করা
-
বিভিন্নি রকমের ঢালের ধারণা
ঢালের
সংজ্ঞা:
'একটি
সরলরেখা x অক্ষের ধনাত্মক দিকের সাথে যে কোণ উৎপন্ন করে তার ট্যানজেন্টের মান কে
ঢাল বলে।' সংজ্ঞা থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে ঢালের সাথে সরলরেখার সম্পর্ক আছে।
এই
সংজ্ঞাটি কলেজে পড়েছিলাম। এখন বুঝি, এইটা হলো সেই সংজ্ঞা যে সংজ্ঞা দ্বারা ঢালের
প্রকৃত অর্থ অর্থাৎ ঢাল সম্পর্কে কিছুই বোঝা যায় না।
ঢালের
সংজ্ঞা সহজভাবে,'ঢাল (Slope) দিয়ে বোঝায় একটা ফাংশন বাড়ছে না কমছে। যদি বাড়ে
কত দ্রুত বাড়ছে, কমলে কত দ্রুত কমছে'।
এই
সংজ্ঞা দ্বারাও যদি কিছু বোঝা না যায় তাতেও সমস্যা নাই। পুরো পোস্টটি পড়ার পর আশা
করি বোঝা যাবে।
ঢালের
সাথে সরলরেখার সম্পর্ক:
মনে
করো, বাজারে একটি নতুন স্পেশাল সিম অপারেটর এনেছি 'নাঈম
সিম'।
এই সিমের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এই সিমের কলরেট ৫ পয়সা প্রতি মিনিট। (আমার সিম খুব
সহজেই অন্য অপারেটরদের হারিয়ে দেবে, মুহাহাহাহা 😂)
আমি
যেহেতু সংগীতপ্রেমী একজন মানুষ তাই নিয়ম করে দিয়েছি যে এই সিম ব্যাবহারকারীদের
প্রত্যেককেই একটি কলার টিউন অবশ্যই রাখতে হবে এবং তার জন্য প্রতি মাসে সার্ভিস
চার্জ ২০ পয়সা করে দিতে হবে।
এখন
মাসের বিলটা কেমন হবে সেটা দেখার চেষ্টা করি। কেউ যদি x মিনিট কথা বলে তাহলে বিলটা
কত হবে? যেহেতু প্রতি মিনিট ৫ পয়সা এজন্য তাকে 5x পরিমাণ বিল দিতে হবে। আর যেহেতু
২০ পয়সা অতিরিক্ত দিতেই হবে কলার টিউনের জন্য, তাহলে তার মোট বিল হবে 5x+20
এই
মোট বিলটাকে যদি আমরা y দ্বারা প্রকাশ করে সমীকরণ আকারে সাজাতে চাই তাহলে
ব্যাপারটা দাড়াবে,
y=5x+20
আমরা
যদি এই সমীকরণটির একটা গ্রাফ আকার চেষ্টা করি তাহলে ব্যাপারটা কেমন দেখাবে?
আমি
যদি এক মিনিটও কথা না বলি, অর্থাৎ যদি 0 মিনিট কথা বলি, তাহলে আমার বিল কত হবে? ২০
পয়সা, কলার টিউনের জন্য।
১
মিনিট কথা বলার জন্য মাসিক বিল (5+20=25 Paisa/Month)
২
মিনিট কথা বলার জন্য মাসিক বিল (5+5+20=30 Paisa/Month)
৩ মিনিট কথা বলার জন্য মাসিক
বিল (5+5+5+20=35 Paisa/Month)
গ্রাফে
লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে বিন্দুগুলি যোগ করার পর আমরা সরলরেখা (Linear Relation)
পেয়ে যাচ্ছি। আবার যদি আমার বানানো সমীকরণের দিকে লক্ষ্য করি y=5x+20 যেটি
কিনা সরলরেখার সাধারণ সমীকরণ বা আকার y=mx+c এর
সাথে মিলে যাচ্ছে। যেখানে আমাদের সমীকরণে ছিল, m=5 এবং c=20.
এখানে
স্পষ্টতই লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, প্রতি ১ মিনিট বেশি কথা বলার জন্য আমার মাসিক বিল
৫ পয়সা করে বাড়ছে। অর্থাৎ এই ব্যাপারটিকে আমরা কলরেট বলে জানি। এখানে কলরেট ৫
পয়সা/মিনিট। রেট শব্দটার বাংলা অর্থ হলো পরিবর্তনের হার। এই পরিবর্তনের হারকেই
আমরা গণিতের ভাষায় বলছি 'ঢাল'। এইটা আসলে উন্নতির গতি প্রকাশ করে। কিভাবে? এভাবে
ভাবা যায়, ১ মিনিট বেশি কথা বললে ৫ পয়সা বেশি বিল আসে।
ঢালের
বাস্তব উদাহরণ:
চৌধুরী
সাহেবের ৫ সন্তান। তিনি তার মৃত্যুশয্যায় ৫ ছেলেকে ডাক দিলেন (আবুল, বাবুল, কাবুল,
ডাবুল, ইবুল সংক্ষেপে A,B,C,D,E)
তো
তিনি তার সন্তানদের ডাক দিয়ে বললেন বাবারে আমার তো বেশিদিন নাই, আমি মারা যাওয়ার
সময় আমার কাছে যা আছে তোমাদের দিয়ে গেলাম। এরপর দেখা গেল যে তারা সমান ভাবে
প্রত্যেকেই ৪০ হাজার টাকা করে পেল।
এরপর
২ বছর, ৪ বছর আর ৬ বছর পর তাদের কাছে কত টাকা ছিল সেটা নিচের সারণিতে দেখানো হলো-
|
|
শুরুতে
|
২ বছর পর
|
৪ বছর পর
|
৬ বছর পর
|
|
আবুল
|
৪০ হাজার
|
৬০ হাজার
|
৮০ হাজার
|
১০০ হাজার
|
|
বাবুল
|
৪০ হাজার
|
৩০ হাজার
|
২০ হাজার
|
১০ হাজার
|
|
কাবুল
|
৪০ হাজার
|
৪০ হাজার
|
৪০ হাজার
|
৪০ হাজার
|
|
ডাবুল
|
৪০ হাজার
|
৮০ হাজার
|
১২০ হাজার
|
১৬০ হাজার
|
|
ইবুল
|
৪০ হাজার
|
২০ হাজার
|
০
|
-২০ হাজার
|
চৌধুরী
সাহেবের মৃত্যুর সময় আবুল, বাবুল, কাবুল, ডাবুল, ইবুলের কাছে ৪০ হাজার করে টাকা
থাকলে সারণী থেকে দেখা যাচ্ছে যে পরবর্তীতে কয়েক বছর অতিক্রম করার পর আর সবার কাছে
সমান ভাবে টাকা নেই। অর্থাৎ তাদের মধ্যে কেউ ওই ৪০ হাজার টাকা কাজে লাগিয়ে মোট
টাকার অংক বাড়িয়ে ফেলছে আবার কেউ ৪০ হাজার টাকা ফালায় রাখছে আবার কেউ হয়তো ব্যবসায়
লস খেয়ে ঋণ করে ফেলছে।
আমরা যদি আবুল, বাবুল, কাবুল এই তিন জনের গ্রাফ আকার চেষ্টা করি তাহলে ব্যাপারটা এমন দাড়াবে যে-
স্পষ্টত দেখা যাচ্ছে, আবুলের গ্রাফটা ঊর্ধ্বমুখী। এই যে আবুলের গ্রাফটা উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে, সেটাকে গণিতের ভাষায় বলে ঢালটা পজিটিভ বা ধনাত্মক (Positive Slope)। ঢাল ধনাত্মক হওয়ার অর্থ হচ্ছে x বাড়লে y বাড়বে। অপরদিকে ঢাল ঋণাত্মক হওয়ার অর্থ হচ্ছে একটা বাড়লে আরেকটা কমবে। গ্রাফ থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে সময় বাড়ার সাথে সাথে বাবুলের টাকার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। সুতরাং বাবুলের ঢাল ঋণাত্মক বা নেগেটিভ।
এই
যে ঢাল তার আরেকটা সমার্থক বাংলা হচ্ছে 'নতি'। আমরা বাংলায় একটা খুবই সুন্দর শব্দ
জানি- 'উন্নতি'। এটা কিন্তু একেবারেই গাণিতিক শব্দ। উন্নতি শব্দটা বাংলায় ভাংলে
এমন দেখাবে 'উদ+নতি'। (ব্যাকরণ শিখিয়ে ফেললাম নাকি!) 😉
এখানে
উদ মানে হচ্ছে উপরের দিকে ওঠা আর নতি মানে হচ্ছে ঢাল। অর্থাৎ উন্নতি অর্থ হল উপরের
দিকে ঢাল (Upward Slope), যেটা আবুলের ক্ষেত্রে হয়েছে। আর বাবুলের ক্ষেত্রে
যেটা হয়েছে সেটা হলো অবনতি অর্থাৎ নিচের দিকে ঢাল (Downward Slope).
মাঝখানে
আরেকজনের গ্রাফ আছে সে হচ্ছে কাবুল। তার কোন পরিবর্তন নাই। শুরুতেও ৪০ হাজার টাকা
ছিল এবং ৬ বছর পরেও তার কাছে ৪০ হাজার টাকাই আছে। তার উন্নতিও নেই অবনতিও নেই। তার
কোনো পরিবর্তন নেই অর্থাৎ তার ঢাল নেই। সহজ কথায় কাবুলের ঢাল শূন্য।
এখন যদি আমরা আবুল ও ডাবুলের
মধ্যে চিন্তা করি তাহলে কি দেখা যাবে?
গ্রাফ
থেকে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে, আবুল ধীরে ধীরে উন্নতি করেছে। ডাবুল কিন্তু আরও ভালো
ছেলে। সে আরও বেশি দ্রুত উন্নতি করেছে। আবুলের গ্রাফের চেয়ে ডাবুলের গ্রাফ আরও
খাড়া ভাবে উপরে উঠে গেছে। এই অবস্থায় আমরা বলি যে, আবুল ও ডাবুল দুইজনের ঢালই
ধনাত্মক কিন্তু ডাবুলের ঢাল বেশি। তার মানে ঢাল জিনিসটা হলো
উন্নতির গতি (উপরের দিকে ওঠার গতি)। যে যত দ্রুত উন্নতি করে তার ঢাল তত বেশি।
এবার
আরও দুইজনের কথা চিন্তা করি তারা হলো বাবুল ও ইবুল-
গ্রাফ থেকেই দেখা যাচ্ছে তাদের দুইজনের গ্রাফই নিচের দিকে নামছে। অর্থাৎ তাদের অবনতি হচ্ছে তাদের দুইজনের অবস্থাই খারাপ। সহজকথায় তাদের দুইজনের ঢালই ঋণাত্মক। এখানে ইবুলের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। তার ছয় বছর পর টাকার পরিমাণ -২০ হাজার টাকা। অর্থাৎ তার কাছে তো কিছু নেই-ই বরং সে ধার করে বসে আছে। বাবুল এবং ইবুলের মধ্যে যেহেতু অবনতি বেশি দ্রুত ইবুলের হচ্ছে সেহেতু এদের দুজনের মধ্যে ইবুলের ঢাল বেশি ঋণাত্মক।
আশা
করি ঢাল চেনা নিয়ে আর কোন সমস্যা থাকার কথা না যে কোনটি ধনাত্মক, ঋণাত্মক বা শূন্য
কিংবা কার থেকে কার ঢালের মান বেশি বা কম।
ঢালের
মান বের করা:
আমরা
তো বুঝলাম যে ঢাল মানে উন্নতির গতি। কিন্তু উন্নতির গতিটা মাপব কিভাবে? অবশ্যই
সেটা মাপা যাবে।
আবুল
ও ডাবুলের গ্রাফটার দিকে আবার তাকাই, তাদের মধ্যে ডাবুল সাহবের গতি বেশি। কত বেশি
সেটা আমরা জানতে চাই। চলুন দেখা যাক দুই বছরে কার কত টাকা বেড়েছে?
৪ থেকে ৬ বছরের মধ্যে যে পরিবর্তন সেটা দেখাচ্ছি ঐকিক নিয়মের সাহায্য নিয়ে-
আবুলের
২ বছরে বেড়েছে ২০ হাজার টাকা
আবুলের
১ বছরে বেড়েছে (২০/২) হাজার টাকা= ১০ হাজার টাকা
অর্থাৎ এখানে
আবুলের ক্ষেত্রে প্রতি বছরে ১০ হাজার টাকা করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থাৎ আবুলের
উন্নতির গতি ১০ হাজার টাকা/বছর বা তার ঢাল= ১০ হাজার টাকা/বছর।
আবার,
ডাবুলের
২ বছরে বেড়েছে ৪০ হাজার টাকা
তাহলে
ডাবুলের ১ বছরে বেড়েছে (৪০/২)= ২০ হাজার টকা
অর্থাৎ এখানে
ডাবুলের ক্ষেত্রে প্রতি বছরে ২০ হাজার টাকা করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থাৎ ডাবুলের
উন্নতির গতি ২০ হাজার টাকা/বছর বা তার ঢাল= ২০ হাজার টাকা/বছর।
তাহলে
ঢাল জিনিসটা কি দাড়ালো? 😩
x
এর মান ১ বাড়লে y এর মান কত বাড়লো সেটা হলো ঢাল। এখানে ডাবুলের ক্ষেত্রে x এর মান
১ বাড়া মানে হচ্ছে ১ বছর সময় অতিবাহিত হলে y এর মান মানে তার টাকার পরিমাণ ২০
হাজার করে বাড়ছে। অর্থাৎ ডাবুলের ঢাল= ২০ হাজার টাকা/বছর।
এই
ঐকিক নিয়মটিকেই আমরা গাণিতিক উপায়ে সাজিয়ে ঢালের মান বের করি। 😲
আবার
সেই প্রথম উদাহরণ 'নাঈম সিম' এর
কথা ভাবা যেতে পারে। ওইখানে x ছিল কত মিনিট কথা বলছি আর y ছিল মোট বিল। কলরেট ৫
পয়সা/মিনিট মানে হলো- ১ মিনিট আরও বেশি কথা বললে বিল বাড়বে ৫ পয়সা করে। x এর মান ১
বাড়লে y বাড়ে ৫। তাই এক্ষেত্রে ঢাল=৫।
বিভিন্ন
রকমের ঢাল:
ঢাল
আছে চার রকমের।ইতিমধ্যেই আমরা তিন রকমের ঢালের কথা জেনেছি। পজিটিভ, নেগেটিভ আর
শূন্য। আরও একটা ঢাল আছে সেইটাকে আমরা বলি অসংজ্ঞায়িত ঢাল।
নিচে
চার রকমের ঢালের সংজ্ঞা গ্রাফ সহ দেয়া হলো-
পজিটিভ
ঢাল:
একটা সরলরেখা ডানে গেলে যদি
উপরের দিকে ওঠে, তখন ঢাল ধনাত্মক। অর্থাৎ এক্ষেত্রে x বাড়লে y এর মান অবশ্যই
বাড়বে। উদাহরণস্বরূপ আবুল ও ডাবুলের গ্রাফ-
নেগেটিভ ঢাল:
একটা সরলরেখা ডানে গেলে যদি
নিচের দিকে নামে তাহলে ঢাল ঋণাত্মক। অর্থাৎ এক্ষেত্রে অবশ্যই x বাড়লে y এর মান
কমবে। উদাহরণস্বরূপ বাবুল ও ইবুলের গ্রাফ-
শূন্য ঢাল:
শূন্য
ঢাল মানে হলো কোন পরিবর্তন নেই। নেই কোন উন্নতি নেই কোন অবনতি। অর্থাৎ এক্ষেত্রে x
এর মান যতই বাড়ুক না কেন y এর কোন যায় আসে না বা y এর মানের কোন পরিবর্তন হবে না।
কোনরূপ পরিবর্তন নেই বিধায় এর ঢাল শূন্য। এই ঢালের আকৃতি হবে x অক্ষের সমান্তরাল।
উদাহরণস্বরূপ কাবুলের গ্রাফ-
অসংজ্ঞায়িত
ঢাল:
এই ঢাল পাওয়া যায় যখন রেখাটি
y অক্ষের সমান্তরাল হয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে x এর মান বাড়লে y এর কোন মানই নিশ্চিত
ভাবে জানা যায় না বা বোঝা যায় না। অনিশ্চিত বা অসংজ্ঞায়িত মানেত জন্য এই ঢালটিকে
বলা হয় অসংজ্ঞায়িত ঢাল।
আমি
যতদূর পেরেছি আমার এই পোস্টে ঢাল সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। বোঝার
সুবিধার্তে পর্যাপ্ত গ্রাফ সংযোজন করেছি। আশা করি ঢাল সম্পর্কে আর কোন সমস্যা
থাকার কথা না। তারপরেও সবার গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি। ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর
দৃষ্টিতে দেখবেন। ঘরে বসে অর্থনীতি চর্চা করুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ ।
~ঢাল
সম্পর্কে বিস্তারিত লিখতে গিয়ে অনেক ডাটা নেট থেকে কালেক্ট করেছি।~
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ: 'চমক
হাসান' স্যার 💚।
আমাদের ফেসবুক পেজ এ যেতে -এখানে ক্লিক করুন-
Email: mail.nhrahat@gmail.com

0 Comments